মূল পাতা মুসলিম বিশ্ব চোখের সামনে আমি আমার মা ও ভাইবোনকে পুড়তে দেখেছি; গাজ্জার শিশুর হৃদয়বিধারক বর্ণনা
মুসলিম বিশ্ব 28 May, 2025 02:21 PM
ইসরাইলের হামলায় মৃত্যুপুরিতে পরিণত হয়েছে ফিলিস্তিনের গাজ্জা উপত্যকা। সন্তানের সামনে মা-বাবা, মা-বাবার সামনে সন্তান; স্ত্রীর সামনে স্বামী এবং স্বামীর সামনেই স্ত্রী পুড়ে ছাড়খার হয়ে যাচ্ছে ইহুদিবাদী সন্ত্রাসীদের অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের হামলায়। এমনই এক নির্মম ঘটনার বর্ণনা দিলেন ফিলিস্তিনের শিশু ওয়ার্দ।
আগুনের লেলিহান শিখার মাঝে মেয়েটির ক্লাস রুম থেকে বের হওয়ার সেই করুন দৃশ্যটি সোমবার ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। মেয়েটি বর্ণনা করে, ‘মিসাইলটা আমাদের ওপরই পড়ল। স্কুলটা আগুনে জ্বলে উঠল। আর চোখের সামনে আমি আমার মা ও ভাইবোনকে পুড়তে দেখলাম।’
মঙ্গলবার (২৭ মে) হাসপাতালের বিছানায় বসে চাচা ইয়াদ মুহাম্মদ আল শিক খলিলকে এমন বিভীষিকাময় পরিস্থিতির কথা জানায় ওয়ার্দ।
রোববার মধ্যরাতে আশ্রয়স্থল হিসাবে ব্যবহৃত ফাহমি আল-জারজাওয়ি স্কুলে একের পর এক বোমা নিক্ষেপ করে ইসরাইলি যুদ্ধবিমান। আগুন ধরে যায় ক্লাসরুমগুলোতে। মুহূর্তের মধ্যে মৃত্যু ঘটে অন্তত ৩৬ জনের। যাদের মধ্যে ১৮ জন শিশু ও ৬ জন নারী।
সিবিসি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্কুলে হামলায় ওয়ার্দের মা ও পাঁচ ভাইবোন নিহত হয়েছেন। ভাইবোনদের বয়স ২ থেকে ১৮ বছর। তারা সবাই হামলার সময় ঘুমিয়ে ছিলেন।
সিবিসি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওয়ার্দের বাবা ও এক ভাই গুরুত্বর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আগুনের ভেতর থেকে ওয়ার্দকে হেঁটে বেরিয়ে আসতে দেখে উদ্ধারকর্মীরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন বলে জানিয়েছে সিবিসি নিউজ।
ওয়ারদের চাচা ইয়াদ বলেছেন, আমি রাতের বেলায় খবর পেলাম আমার ভাইয়ের পরিবার যে স্কুলে ছিল সেটি বোমায় উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি ছুটে যেতে চাইলেও পারিনি। কারণ চারপাশে তখনো গোলাবর্ষণ চলছিল। অন্ধকারে কিছুই দেখা যাচ্ছিল না।
ভোরে তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছান। সেখানে যা দেখেন, তা ছিল এক বিভীষিকাময় দৃশ্য-ধোঁয়ায় ভরা বাতাস, পোড়া রক্তের গন্ধ, চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা দেহের খন্ডাংশ। ইয়াদ বলেছেন, আমরা প্রথমে লাশ খুঁজছিলাম। পরে কেবল দেহের অংশ খুঁজতে থাকি। হাত, পা, আঙুল, পোড়া কাপড় দেখে লাশ শনাক্ত করার চেষ্টা চলছিল সেখানে।